লেবুকে দীর্ঘ সময় ধরে ফ্রেশ ও সতেজ রাখার সহজ কৌশল বা পদ্ধতি!

ন্না অথবা স্যালাডে চট করে খানিকটা লেবুর ফ্লেভার যোগ করে দিতে চাইলে প্রয়োজন হয় টাটকা টাটকা লেবু। কিন্তু সবসময় এই টাটকা লেবু সংগ্রহ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। অনেক লেবু একসঙ্গে কিনে রাখলে শুকিয়ে যায় ও কালচে রঙ ধারণ করে। যাতে লেবুর আসল স্বাদ, গন্ধ, রং কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।

লেবু সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করা। একবারে বেশি করে কিনে এনে অনেক দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারবেন লেবু। ভাবছেন কী উপায়? চলুন তাহলে জেনে নেই কীভাবে তা করা যায়।

লেবু সংরক্ষণের কৌশলঃ ফ্রিজে লেবু সংরক্ষণ করতে পারেন প্রায় এক সপ্তাহ এর মতো। এভাবে লেবু এক সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকে। যদি লেবু এক মাস সংরক্ষণ করতে চান তাহলে তা ‘জিপ-টপ’ ব্যাগে রেখে দিয়ে সংরক্ষণ করতে পারেন। এতে করে লেবু সতেজ থাকে, শুকিয়ে যায় না। প্রায় এক মাসের মতো টাটকা থাকে। কাটা লেবু সংরক্ষণ করতে চাইলে তার জন্য খাবার পেঁচানোর প্যাকেট বা বন্ধ কোনো কিছুতে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এই উপায়ে লেবু কয়েক দিন পর্যন্ত ভালো থাকে।

কতগুলো লেবু একসাথে সংরক্ষন করতে তার জন্য একটি কাচের পাত্রে জল দিয়ে তাতে সব লেবু ফ্রিজে রাখলে কয়েক দিন তা ভালো থাকবে। লেবুকে আবার রস করেও সংরক্ষন করা যায়। তার জন্য সব লেবু একসাথে রস করে রেফ্রিজারেটরে কয়েক দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারেন। এই রস রান্না বা বেকিং ইত্যাদি কাজ করতে ব্যবহার করতে পারেন।

লেবু সংরক্ষনের আরও একটি উপায় হলো লেবুর রস বরফ করে রাখা। লেবুর রস করে তা বরফ করে রাখতে পারেন। প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করতে পারেন। যেমন লেবুর শরবত তৈরিতে এই বরফ ব্যবহার করা যায়। লেবু টুকরা টুকরা করে কেটে একটা মুখবন্ধ পাত্রে রেখে সংরক্ষণ করা যায়। এই নিয়মে লেবু এক সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকবে।

জিপলক ব্যাগে গোটা লেবু রেখে তার এক পাশে একটি স্ট্র রেখে পুরো ব্যাগ এর মুখ বন্ধ করে দিন। এবার ট্র দিয়ে ব্যাগের ভেতরে থাকা অবশিষ্ট বাতাস বের করে দিন এবং ব্যাগটি ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখে দিন। এক মাস পর্যন্ত ভালো থাকবে এই লেবু। লেবু ছোট ছোট টুকরা করে বরফ জমানোর ট্রেতে রেখে দিন এরপর ট্রেতে জল ভরে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। যখন প্রয়োজন হবে তার আগে বরফ গলিয়ে নিন। এভাবে বরফ করে রাখলে ৩ মাস পর্যন্ত তাজা থাকবে লেবু।

চিনিতে লেবু সংরক্ষণ করা যায়। কেটে কেটে টুকরো করে আবার পুরো আকারেও। যদি লেবু গুলো একটি কাচের পাত্রে রাখা হয় এবং প্রচুর পরিমাণে চিনি দিয়ে তা ঢেকে রাখা হয়, এর পরে পাত্রে একটি ঢাকনা বা কাগজ দিয়ে পাত্রের মুখ বন্ধ করে ফ্রিজে রাখা হয় তাহলে তা অনেক দিন পর্যন্ত ভালো থাকে।

লেবু সংরক্ষনের জন্য “লেমনগ্রাস” নামক একটি বিশেষ ডিভাইস আছে যা লেবু সংরক্ষণের জন্য আদর্শ বলা হয়। এর দ্বারা আপনি একটি লেবু সর্ম্পূণ অথবা এটি কাটা অবস্থায় ও সংরক্ষণ করতে পারেন। উদ্ভিজ্জ তেল দিয়ে ও লেবুকে তাজা রাখা যায়। এই তেল লেবুকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে, ফলে লেবু সহজে নষ্ট হয়ে যায় না এবং তা অনেক দিন ব্যবহার করা যায়।

রান্না হোক বা স্যালাড হোক অথবা শরবত সব কিছুতে লেবু ব্যবহার করা যায়। এর ব্যবহারে খাবারে আসে ভিন্ন স্বাদ। সেই সাথে পুষ্টি তো রয়েছে। সুতরাং যার ব্যবহার এতো বেশি তাই তার সংরক্ষন পদ্ধতি ও আমাদের জানা প্রয়োজন। যাতে করে যখন তখন ইচ্ছে মতো এর ব্যবহার করা যায়।

লেবুর কিছু গুনাগুন জেনে রাখুনঃ লেবু এক আজব ফল। নানা জাতের লেবু হয়ে থাকে। আর পুষ্টিগুণ তো বলে শেষ করা যাবে না। লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, যা মানব দেহের জন্য খুবেই উপকারি হয়ে থাকে। বলা হয় চায়ের কাপের এক-চতুর্থাংশ লেবুর রসে থাকে ৩১ শতাংশ ভিটামিন সি। এ ছাড়া আরও আছে ৩ শতাংশ ফোলেট আর ২ শতাংশ পটাশিয়াম। সব মিলিয়ে ১৩ ক্যালরি।

লেবুর রয়েছে নানা রকম কার্যকর গুনাবলি। যেমন লেবু ওজন কমাতে সাহায্য করে, ত্বককে সুন্দর করে, সতেজ রাখে, হজমে সহায়তা করে, নিশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করে। এছাড়াও লেবু কিডনির পাথর হওয়া রোধ করে, রক্ত পরিশুদ্ধ করে, ক্যানসার প্রতিরোধ করে ইত্যাদি আরো অনেক কার্যকারিতা রয়েছে লেবুর।

About admin

Check Also

ছবিটি ভালো করে লক্ষ্য করুন! লুকিয়ে রয়েছে একটি প্রাণী! দেখুন তো খুঁজে পান কি না

মস্তিষ্কের বিভ্রান্তি ঘটানোর জন্য অনেক সময় আমাদের সামনে আসে এমন কিছু ছবি, যা আমাদের দৃষ্টি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *