একশ লিচু বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়

রাজশাহীর বাজারে আসছে শুরু করেছে লিচু। মধুমাসের আগেই রসেভরা টুকটুকে ফলের দেখা মিললে চোখ ছানাবড়া হতেই পারে। প্রায় সপ্তাহখানেক আগে থেকে অল্প দামে বিক্রি হচ্ছে লিচু। প্রতি এক’শ টি লিচু বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৬০ থেকে ২৫০ টাকায়।

রাজশাহী রেল স্টেশন এলাকা, রেলগেট কামরুজ্জামান চত্তর, উপশহর নিউমার্কেট এমনকি সাহেববাজার এলাকায় দেখা মিলছে লিচুর। ভ্যানে করে থরে থরে সাজানো লিচুর দিকে চোখ পড়তেই এগিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতা। আগ্রহ নিয়ে কাছে গেলেও না কিনেই ফিরছেন অনেকে।

কারণ, পরিপুষ্ট লিচু এখনো সেভাবে আসতে শুরু করেনি, যা এসেছে সেগুলো অপরিপক্ব। আকারে ছোট। রসালো কিছু মিললেও স্বাদ তেমন ভালো নয়। বেশি লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা এগুলো বাজারে আনছেন লিচু।

নগর ভবন মোড়ে লিচু ভ্যানে লিচু বিক্রি করছিলেন হাফিজুর ইসলাম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো লিচুর জাত সম্পর্কে কিছু জানিনা। কৃষি বিভাগ হয়ত বলতে পারবে। আমার ধারণা দেশি জাতের লিচু এটা। বিক্রি করছি প্রতি ১০০ লিচু ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। তবে বড়গুলোর প্রতি-শ ২৫০ টা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এক’শ লিচু একজনে না কিনলেও ২৫ টি; ৫০ টি করে কিনছেন।

রাজশাহীর বাজারে কোথায় থেকে আসছে অপরিপক্ক লিচু- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, লিচু বাদুড়ের প্রিয় একটা ফল। বাগানিরা বাদুড়ের ভয়ে আগেই নামিয়ে ফেলছে। অল্প দাম হলেও কিছু টাকা পাচ্ছে। পরে নামাতে গেলে হয়ত পাবে না। শহরের বাইরে পবা- মোহনপুর উপজেলা থেকে এসব লিচু শহরে নিয়ে এসে বিক্রি করছি।

কথা হয় রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আব্দুল আলিমের সাথে। এই বিশেষজ্ঞ এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, বর্তমানে বাজারে যে লিচু পাওয়া যাচ্ছে তা স্থানীয় জাত। তেমন মিষ্টি নয়, আবার টক ধরণের। বাদুড়ের হাত থেকে বাঁচতে অনেক চাষি আগাম লিচু ভেঙে ফেলেন।

হতে কিছু কিছু লিচু বাজারে আসছে। আরো ১০ দিনের মতো লাগতে পারে ভালো লিচু পেতে। জুনের আগেই আসতে পারে বোম্বাই, চায়না-৩, কাদমি, মোজাফফরপুরী, বেদানা, কালীবাড়ি, মঙ্গলবাড়িসহ অন্য জাতের লিচু। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত টসটসে লিচু বাজারে দেখা মিলবে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে রাজশাহী জেলায় ৫২৪ হেক্টর জমিতে লিচুর গাছ রয়েছে। দূর্গাপুর ৭০ হেক্টর, পুঠিয়া ৬৬ হেক্টর, গোদাগাড়ী ১৯ হেক্টর, চারঘাট ৪৫ হেক্টর ও বাঘা উপজেলায় ২১ হেক্টর। এছাড়া অন্যান্য জায়গায় লিচু চাষ হয়েছে। ৫২৪ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার ১৪৪ মেট্রিকটন লিচুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জানা যায়, রাজশাহীর চেয়ে সাধারণত দিনাজপুরের লিচু স্বাদে ও মানে আলাদা। সারা দেশেই এ লিচুর চাহিদা বেশি। বিভিন্ন জাতের লিচুর মধ্যে আছে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি ইত্যাদি। অপরদিকে রাজশাহী অঞ্চলে মূলত উন্নতমানের জাত হিসেবে পরিচিত বোম্বাই, মাদ্রাজি, কাদমি, মোজাফফরপুরী, বেদানা, কালীবাড়ি, মঙ্গলবাড়ি, চায়না-৩, বারি-১, বারি-২ ও বারি-৩ জাতের লিচু। রসালো এসব লিচুর উৎপাদনও বেশি, আকারও বড়। সে হিসেবে এগুলোও কম যায় না!

About admin

Check Also

২০০ বছর বয়স, এখনো কয়েকশো ফল দেয় এই কাঁঠাল গাছ

পানরুটি শহরের কয়েক কিলোমিটার দূরেই মালিগামপাট্টু নামক গ্রামে রয়েছে একটি ঐতিহ্যবাহী কাঁঠাল গাছ। গাছটির বয়স …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *