পথে বসতে চলেছেন চাষিরা, ১০ কেজি ওজনের তরমুজের দাম ৩০ টাকা

খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার শত শত তরমুজ চাষি লাভের আশায় তরমুজ চাষ করে এবার পথে বসতে চলেছেন । রোজার মাসে এবং বর্তমানে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে তরমুজের যথেষ্ট চাহিদা থাকলেও পাইকারি ক্রেতারা তরমুজ কেনায় তেমন আগ্রহই দেখাচ্ছেন না। ফলে অসংখ্য খেতে বিপুল সংখ্যায় চরম অবহেলায় পড়ে আছে গরমের এই আকর্ষণীয় ফল। একই অবস্থা বাঙ্গির বাজারেরও।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন কয়েক শ ট্রাক প্রবেশ করছে এলাকায়। অনেক কৃষক সব হারানোর চেয়ে ‘পানির দরে’ তরমুজ তুলে দিচ্ছেন তাদের হাতে। সোমবার খুলনার কদমতলা আড়তে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারিতে তারা ১০ কেজি ওজনের প্রতি পিস তরমুজ কিনছেন মাত্র ৩০ টাকায়।

প্রতি পিস তরমুজের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যেই ধরছেন তারা। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে পিস হিসেবে তরমুজ কিনে প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। অর্থাৎ ১০ কেজি ওজনের একটি তরমুজ তাদের কাছ থেকে খুচরা ক্রেতারা কিনছেন প্রায় ২০০ টাকায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন গ্রামের রাস্তার পাশে তরমুজ স্তূপ করে রাখা হয়েছে বিক্রির আশায়। সেখানে অবহেলায় হয়তো পচে যাচ্ছে, কিংবা গরু-ছাগলে খেয়ে যাচ্ছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখালে নামমাত্র মূল্যে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে। যারা রোজার মধ্যে আগাম তরমুজ তুলতে পেরেছেন তারা বেশ দাম পেয়েছেন।

তরমুজচাষি উপজেলার ফুলতলা গ্রামের সুব্রত মণ্ডল বলেন, পচন ধরার ভয়ে নিজেই ট্রাক ভাড়া করে খুলনার কদমতলা বাজারে দেড় হাজার পিস তরমুজ নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে বিশাল বিশাল তরমুজ মাত্র ২০/৩০ টাকা পিসে বিক্রি করতে হয়েছে।

গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের ঝড়ভাঙ্গা গ্রামে তরমুজ চাষ করেছিলেন বিজয় মণ্ডল, সুকুমার মণ্ডলসহ বহু লোক। বিজয় মণ্ডল বলেন, তিনি তিন বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে অনেক ভালো। তবে দাম না পাওয়ায় খেতেই পড়ে আছে। খুলনার সন্ধ্যা বাজারে তরমুজ কিনতে আসা ক্রেতা নাজমা সুলতানা বলেন, রোজার সময় তরমুজের দাম এত বেশি ছিল যে তখন কিনতে সমস্যা হয়েছে। এখন কিনছি মাত্র ১৫ টাকা কেজি দরে।

খুলনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান জানান, চলতি বছর তরমুজের উত্পাদন অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো। এ বছর জেলায় ১৩ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় হেক্টরপ্রতি গড়ে ৫০ মেট্রিক টন তরমুজ উত্পাদিত হয়েছে, যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেশি। রোজার পর চাহিদা কমে যাওয়ায় দাম কমে গেছে। যেসব চাষি আগে বিক্রি করতে পেরেছেন তারা লাভবান হয়েছেন।

About admin

Check Also

২০০ বছর বয়স, এখনো কয়েকশো ফল দেয় এই কাঁঠাল গাছ

পানরুটি শহরের কয়েক কিলোমিটার দূরেই মালিগামপাট্টু নামক গ্রামে রয়েছে একটি ঐতিহ্যবাহী কাঁঠাল গাছ। গাছটির বয়স …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *