নিজস্ব প্রতিবেদন:বর্তমান সময়ে জমি কিনে বাড়ি করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। আপনি চাহিদামতো জমি কিনতে চাচ্ছেন, কিন্তু পাচ্ছেন না। অনেকেই নিজের পছন্দমতো একটি ফ্ল্যাট বা প্লট কিনতে চান। আপনার এই স্বপ্নকে সত্যি করতে অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠান অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করে সেগুলোর বিজ্ঞাপন নিয়ে হাজির হচ্ছেন।
তাই অনেকেই জমি কিনে বাড়ি করার ঝামেলায় না গিয়ে আবাসন প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্ল্যাট বা প্লট কিনছেন। আবাসন প্রতিষ্ঠান বা প্রপার্টি কোম্পানিগুলোকে জমি দেওয়া বা প্লট-ফ্ল্যাট কেনার আগে বেশ কিছু দেখে ও যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে ঝামেলায় পড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।
বাড়ি, প্লট বা ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে কারও দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে তাড়াহুড়ো করে কেনার চুক্তি করতে যাবেন না। যেহেতু আপনি আপনার সঞ্চিত অর্থ দিয়ে একটি স্থায়ী ঠিকানা গড়তে চাচ্ছেন, তাই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি জমির দলিলপত্র, চুক্তিপত্রগুলো একজন আইনজীবীকে দেখিয়ে নেওয়া ভালো।
এরপর ফ্ল্যাট বুকিং দিন।ফ্ল্যাট ক্রেতা হিসেবে আপনার যা করতে হবেজমির দলিল সঠিক কি না, তা ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে। যে কোম্পানির কাছ থেকে ফ্ল্যাট কিনছেন সেই প্রতিষ্ঠানের সরকারি অনুমোদন আছে কি না, রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত প্ল্যান আছে কি না, কোম্পানিটি রিহ্যাবের সদস্য কি না—তা জেনে নিতে হবে।
ফ্ল্যাট ক্রয়-বিক্রয়সংক্রান্ত সব শর্ত ভালো করে বুঝে ও দেখে নিতে হবে। কেনার আগে একটু সতর্কতা অবলম্বন করলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এরপর কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে আপনি রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০-এর সাহায্য নিতে পারবেন।একজন ক্রেতা হিসেবে আইনি সহায়তায় চুক্তি করুন।
তাতে কীভাবে ফ্ল্যাট কিনছেন, শর্তগুলো সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। ভবন নির্মাণে যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হবে তা চুক্তিতে উল্লেখ থাকতে হবে। ফ্ল্যাটের অনুমোদিত নকশাও আবাসন নির্মাতা ক্রেতাকে দেখাতে এবং তা দিতে বাধ্য থাকবেন।
আপনি কোন ফ্ল্যাটটি কিনছেন তা চুক্তিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করুন। আবার আপনার বিনা অনুমতিতে ফ্ল্যাট পরিবর্তন করতে পারবে না, তা চুক্তিতে বলে রাখুন। শর্তের বাইরে অতিরিক্ত কোনো অর্থ দিতে ক্রেতা বাধ্য নন, তা–ও চুক্তিতে উল্লেখ করুন।
যদি কোনো উন্নত মানের সরঞ্জাম সংযোজনের প্রয়োজন হয়, তবে দুই পক্ষের পারস্পরিক সম্মতিক্রমে তা করতে হবে, তা চুক্তির শর্তে উল্লেখ থাকতে হবে।রিয়েল এস্টেট আইন অনুযায়ী একজন ক্রেতা তাঁর সমুদয় মূল্য পরিশোধের ৩ মাসের মধ্যে আবাসন নির্মাতা দখল হস্তান্তর, দলিল সম্পাদন এবং নিবন্ধনের যাবতীয় কাজ সম্পাদন করে দেবেন।
হস্তান্তরকালে আয়তন কমবেশি হলে তার দাম ক্রয়মূল্য অনুযায়ী ৩ মাসের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। আর যদি আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হয় চুক্তিতে নির্ধারিত ক্ষতিপূরণসহ সব অর্থ ক্রেতাকে ৬ মাসের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। চুক্তিতে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ না থাকলে তা পরিশোধিত অর্থের ওপর ১৫ শতাংশ হারে নির্ধারিত হবে।
আবার কোনো কারণে চুক্তি বাতিল করতে চাইলে আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে আপনার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিশোধিত অর্থের ১০ শতাংশ বাদ দিয়ে বাকি অর্থ ৩ মাসের মধ্যে এককালীন চেক অথবা পে-অর্ডারের মাধ্যমে ফেরত দিতে হবে।