ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরে ক্লাসে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এই মুসলিম শিক্ষার্থীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে টুইট করেছেন তিনি। আজ বুধবার এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
টুইটে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, তাঁরা কী পোশাক পরবেন, তা তাঁদের নিজেদের পছন্দের বিষয়। এই অধিকার সংবিধানের মাধ্যমে সুরক্ষিত।
টুইটে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘বিকিনি হোক, ঘোমটা হোক, জিনস হোক বা হিজাব হোক; তিনি কী পরতে চান, তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একজন নারীর। এই অধিকার ভারতীয় সংবিধানের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। নারীদের হয়রানি বন্ধ করুন।’
Whether it is a bikini, a ghoonghat, a pair of jeans or a hijab, it is a woman’s right to decide what she wants to wear.
This right is GUARANTEED by the Indian constitution. Stop harassing women. #ladkihoonladsaktihoon
— Priyanka Gandhi Vadra (@priyankagandhi) February 9, 2022
কাল শুরু হতে যাওয়া উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান ইস্যু নারী অধিকার। নারীর ক্ষমতায়ন। এই নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রচারে নেতৃত্ব দেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। কংগ্রেস অঙ্গীকার করে, নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর ৪০ শতাংশ হবেন নারী। তারা আরও বলে, নির্বাচিত হলে মেয়েদের জন্য বিনা মূল্যে স্মার্টফোন ও টু-হুইলার দেবে।
সম্প্রতি কর্ণাটক রাজ্যের উদুপি জেলার একটি সরকারি কলেজের কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম-সংক্রান্ত কিছু বিধি জারি করে। এতে বলা হয়, হিজাব পরে ক্লাস করা যাবে না। কারণ, তা বৈষম্য সৃষ্টিকারী। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী, ছাত্রীরা ‘স্কার্ফ’ পরতে পারবে। তবে তার রং হতে হবে ওড়নার রঙের সঙ্গে মানানসই। এই নিয়মের প্রতিবাদ জানায় মুসলমান ছাত্রীরা। তারা বলে, এত দিন ধরে লেখাপড়ার মাঝে হিজাব কোনো সমস্যা সৃষ্টি করেনি। প্রতিবন্ধকতাও নয়। আচমকাই এই বিধিনিষেধ। এ নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের অন্যত্রও।
রাজ্যের কোথাও হিজাবের বিরুদ্ধে হিন্দু শিক্ষার্থীদের একাংশকে গেরুয়া চাদর ও ওড়না পরতে দেখা যায়। দুই ধর্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বচসাও হয় কোথাও কোথাও। কর্ণাটকে হিজাব-বিতর্কের জেরে রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ তিন দিন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই স্বয়ং। হিজাব পরা নিয়ে কর্ণাটকের একটি ঘটনা গতকাল মঙ্গলবার সামনে এলে তা ভারতজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এক মুসলিম ছাত্রী বোরকা ও হিজাব পরে স্কুটি চালিয়ে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকতেই হেনস্তার মুখে পড়ে। তার উদ্দেশে একদল উন্মত্ত তরুণ জাফরান স্কার্ফ নেড়ে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে চিৎকার করছে। তারা তার দিকে এগিয়ে আসছে। মেয়েটি এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে দূরে সরে যেতে যেতে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে পাল্টা জবাব দেয়। পরে মেয়েটিকে কর্তৃপক্ষ নিরাপদে সরিয়ে নেয়।
হিজাব-বিতর্কের অবসানে কিছু মুসলমান ছাত্রী কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। গতকাল সেই মামলার প্রথম শুনানি ছিল। আজ বুধবারও শুনানি চলবে।